নিত্যকন্ঠ আবহাওয়া ডেস্ক :
বাংলাদেশ আবহাওয়া দফতরের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য মোতাবেক দক্ষিন মধ্য বঙ্গপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘণীভুত হয়ে সুস্পস্ট লঘুচাপ আকারে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো ঘনীভূত হতে পারে।
অপরদিকে বেসরকারি আবহাওয়া গবেষণা সংস্থা
Bangladesh weather observation team
(Bwot) জানিয়েছে পশ্চিম মধ্য বঙ্গপোসাগর এবং তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গপোসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি কিছুটা উত্তর পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে নিম্নচাপে পরিনত হয়েছে। এটি গতকাল ২১ শে অক্টোবর রাত ১০ টা বেজে ৪৫ মিনিটে মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১০৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ পশ্চিমে ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিলো। নিম্নচাপটি আরও জোরদার হয়ে প্রাথমিকভাবে উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতেপারে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটার এর ভেতরে বাতাসের একটানা গড় গতিবেগ ঘন্টায় ৪৫ কিলোমিটার,যা দমকা হাওয়া আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।সাগর ঐ স্থানে উত্তাল রয়েছে।
নিম্নচাপটি আজ গভীর নিম্নচাপ ও আগামি ২৩ শে অক্টোবর ( উপযুক্ত পরিবেশ পেলে) সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিনত হতেপারে। তখন এর বাতাসের একটানা গতিবেগ হতেপারে ৭০/৭৫ কিলোমিটার ঘন্টায়। এটি ঘূর্ণিঝড় এ পরিনত হলে এর নাম হবে ( হামুন) এটি ইরানের দেয়া নাম।
নিম্নচাপ টি প্রাথমিকভাবে উত্তর পশ্চিমে অগ্রসর হবে, এরপর কিছুটা উত্তর দিকে,তারপর উত্তর পূর্বো দিকে অগ্রসর হতেপারে।
এটি গভীর নিম্নচাপ অথবা সাধারণ ঘূর্ণিঝড় আকারে আগামী ২৫ শে অক্টোবর দুপুরের পর বরিশাল থেকে চট্টগ্রাম এর ভেতরে যেকোনো স্থান পটুয়াখালী,নোয়াখালী, ফেণী, চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, চট্টগ্রাম ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় আঘাত করতে পারে। ধারনা করা হচ্ছে এসময় ওই সকল এলাকায় ঘন্টায় ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে আগামী ২৩ শে অক্টোবর হতে চট্টগ্রাম বিভাগ ও দেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হতেপারে,যা পরবর্তীতে দেশের আরও অনেক এলাকায় বিস্তারলাভ করে আগামী ২৭ শে অক্টোবর পর্যন্ত দেশের উপর এই বৃষ্টিপাত চালু থাকতে পারে।
ফলে ২৪ পরগনা,সাতক্ষীরা,খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর,বরগুনা,ঝালকাঠি,বরিশাল,ভোলা,নোয়াখালী,পটুয়াখালী,চাঁদপুর,লক্ষ্মীপুর,কুমিল্লা,নরসিংদী,ব্রাম্মণবাড়িয়া,চট্টগ্রাম,রাঙামাটি,খাগড়াছড়ি,মাদারিপুর,হবিগঞ্জ,আগরতলা,ত্রিপুরা,শরিয়তপুর ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় দমকা হাওয়া সহ ভারি থেকে অতিভারি বর্ষন হতেপারে।
এছাড়াওখু লনা,ঢাকা,বরিশাল,চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশকিছু এলাকায় মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষন হতেপারে। এর ফলে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের নিচু এলাকায় সাময়িক বন্যা পরিস্থিতি তৈরী এবং চট্টগ্রামে পাহাড়ধ্বস এর আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। ঘূর্নিঝড় অথবা নিম্নচাপটি উপকূল অতিক্রম করার সময় আঘাত করা স্থানে স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চ জলোচ্ছ্বাস এ আক্রান্ত হতেপারে। সতর্কতা সংকেত ৩ থেকে ৭ এর ভেতরে থাকতেপারে।
তাই সমুদ্রগামী সকল প্রকার মাছধরা নৌকা ও ট্রলার ও নৌজান সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা উচিৎ এবং আগামী ২৭ শে অক্টোবর এর আগে সাগরে প্রবেশ না করা উত্তম। এছাড়াও যারা শীতকালিন রবি শস্য লাগাতে চাচ্ছেন তারা ১ সপ্তাহ পরে ফসল বপন করুন। তবে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে কৃষকদের কোন সমস্যা নেই।
উল্লেখ্য এটি কোন কারনে ঘূর্ণিঝড়ে পরিনত হলেও মারাত্বক কোন ঘূর্ণিঝড়ে(হারিকেন ক্যাটাগরির) পরিনত হওয়ার সম্ভাবনা নেই,তাই আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারন নেই। একটু সচেতন থাকলেই হবে।
সবচেয়ে বেশি বৃষ্টির প্রভাব থাকবে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগ ও দেশের উপকূলীয় এলাকায়।রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে বৃষ্টির প্রভাব সবচেয়ে কম থাকবে।
আগামীকাল ২৩ থেকে ২৭ শে অক্টোবর পর্যন্ত দেশের উপর একটি শক্তিশালী বৃষ্টিপাত সক্রিয় হতেযাচ্ছে।
বিদ্র: সঠিক আবহাওয়ার তথ্য পেতে সরকারি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে নজর রাখুন এবং তাদের নির্দেশনা মেনে চলুন।
tawhidit.top/