মোঃ মাহতাব হাওলাদার, মহিপুর।। বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে দীর্ঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আজ রোববার (২৩ জুলাই) মধ্যরাতে গভীর সমুদ্রে যাত্রা করবে উপকূলের জেলেরা। এ নিয়ে জেলে পল্লীগুলোতে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। জাল ও ট্রলার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। ব্যস্ততা দেখা গেছে বরফ কলগুলোতেও। দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ মৎস্যবন্দর মহিপুর আলীপুর-সহ কুয়াকাটা সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
বেশ কয়েকটি জেলেপল্লী ঘুরে দেখা গেছে, জেলেরা ইতোমধ্যে ট্রলার ও জাল মেরামতসহ সবরকম প্রস্তুতি সেড়ে ফেলেছেন। সমুদ্রযাত্রার লক্ষ্যে মহিপুর-আলীপুর মৎস্যবন্দরের ঘাটে সহস্রাধিক ট্রলার সারিবদ্ধভাবে নোঙর করে আছে। এসব ট্রলারে মাছ শিকারের জন্য তোলা হচ্ছে জাল। এছাড়া দীর্ঘদিন সাগরে অবস্থানের জন্য জ্বালানী তেল ও মাছ সংরক্ষণের জন্য বরফসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী তোলা হচ্ছে। এসব ট্রলার ইলিশ শিকারের আশায় আজ মধ্যরাতে যাত্রা করবে গভীর সমুদ্রে। জেলেদের সমুদ্রযাত্রায় আড়ৎসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য।
জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে তাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং আজ মধ্যরাতে তারা গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। তারা আশা করছেন, নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগে জালে যে হারে ইলিশ ধরা পড়েছে, এখন তারচেয়ে বেশি ইলিশ পাবেন। তবে তারা নিষেধাজ্ঞাকালীন কর্মহীন সময় পার করলেও তাদের অনেকের ভাগ্যে জোটেনি প্রণোদনার বরাদ্দকৃত সরকারি চাল। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে পার করতে হয়েছে মানবেতর জীবন। তাই নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও খাদ্য সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধিসহ তা সময়মত প্রদানের দাবি জানিয়েছেন তারা। এছাড়া নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় ভারতের জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ তুলে তারা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করে সময়সীমা নির্ধারণেরও দাবি জানান।
মহিপুর মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব রাজু আহম্মেদ রাজা বলেন, ‘আমাদের জেলেরা সমুদ্রযাত্রার সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। কিন্তু অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে বরফ কলগুলো সময়মত বরফ দিতে না পারায় কিছু ট্রলার সমুদ্রে যেতে বিলম্ব হতে পারে। তবে আসন্ন বৈরি আবহাওয়ায় তারা আশানুরূপ মাছ শিকার করতে পারবে কিনা তা বলা মুশকিল।’
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ‘দীর্ঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকারে যাবে। আশা করছি তারা আশানুরূপ মাছ শিকার করে তাদের এতদিনের অর্থনৈতিক দুর্দশা বা দৈন্যতা কাটিয়ে উঠতে পারবে।’
উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগরে থাকা মাছগুলোকে সঠিকভাবে বেড়ে উঠার সুযোগ সৃষ্টি এবং নির্বিঘ্নে মাছের প্রজনন নিশ্চিতকরণে গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ শিকার নিষিদ্ধ করে মৎস্য বিভাগ।
tawhidit.top/