রতন মিয়া,পীরগঞ্জ (রংপুর) সংবাদদাতা।।
একমাত্র সম্বল অটোভ্যান বিক্রি করে কৃষি পণ্যের সরাসরি সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সাফল্যের নতুন গল্প লিখছেন রংপুর জেলার পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউপি’র চেরাগপুর গ্রামের ওসমান গনি’র ছেলে আশিক।
আশিক সপ্তমশ্রেনী পর্যন্ত পড়াশোনা করে প্রথমত অটো ভ্যান চালালেও আয় কম হওয়ায় তা বিক্রি করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে হলুদ সংগ্রহ করে তা সিদ্ধ ও প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে সরবরাহের মাধ্যমে তিনি উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জনের পথে এগিয়ে চলেছেন।
আশিকের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা এবং ভোক্তাদের কাছে বিশুদ্ধ ও প্রাকৃতিকভাবে প্রক্রিয়াজাত হলুদ পৌঁছে দেওয়া। তিনি স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে তাজা হলুদ সংগ্রহ করেন এবং তা পরিষ্কার, সিদ্ধ করে বাজারজাত করেন।
আশিকের ভাষ্যে:
“আমি দেখেছি, কৃষকরা প্রায়ই মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। তাই সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে হলুদ সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের সঠিক মূল্য দেওয়ার পাশাপাশি ভোক্তাদের জন্য গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহের চেষ্টা করছি,” — বলেন আশিক।
কৃষকদের অভিমত:
এই উদ্যোগে কৃষকরাও সন্তুষ্ট। স্থানীয় এক কৃষক জানান, “আগে আমাদের হলুদ কম দামে বিক্রি করতে হতো। কিন্তু এখন আশিকের মাধ্যমে আমরা ন্যায্য দাম পাচ্ছি, যা আমাদের আয় বাড়াতে সাহায্য করছে।”
সাফল্যের পেছনের গল্প:
আশিকের এই যাত্রা সহজ ছিল না। প্রাথমিকভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণ সরঞ্জামের অভাব, বাজারে প্রতিযোগিতা এবং মান নিয়ন্ত্রণের মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে তার দৃঢ় মনোবল, সঠিক পরিকল্পনা এবং কৃষকদের সাথে গড়ে তোলা বিশ্বাসই তাকে সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
আশিক ভবিষ্যতে তার ব্যবসা আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেন, “আমি চাচ্ছি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রক্রিয়াজাতকরণ সক্ষমতা বাড়াতে এবং আন্তর্জাতিক বাজারেও আমাদের পণ্য রপ্তানি করতে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, আশিকের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে কৃষি খাতের জন্য একটি অনুপ্রেরণার গল্প, যা কৃষকদের অর্থনৈতিক উন্নতি এবং ভোক্তাদের জন্য বিশুদ্ধ পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
tawhidit.top/