রংপুরের পীরগঞ্জে শুক্রবার সকালে এক নারীর মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। এক দিন পর শনিবার বিকেলে ওই লাশের খন্ডিত মাথা উা্দ্ধার হয়। এর দুইদিন পর নিহত মহিলা দেলোয়ারার পাঁচ বছরের কন্যা সন্তান সাইমার মৃতদেহ উদ্ধার করলো পীরগঞ্জ থানা পুলিশ। রোববার সকালে (৯ ফেব্রুয়ারি) বড় বদনাপাড়া গ্রামের ঘাতক আতিকুল ইসলামের বাড়ির পিছনে গাছের বাগানের ভিতরে পুতে রাখা গর্ত থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
সহকারি পুলিশ সুপার ডি-সার্কেল আছিফা আফরোজা আদুরি বলেন, নিহত দেলোয়ারার স্বামী গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের দিলালপুর গ্রামের রেজাউল করিম পুলিশের কাছে জানান, তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী দেলোয়ারার সাথে তার কন্যা সাইমাও ছিল। তিনি সাইমার সন্ধান জানতে চান । পুলিশ ঘাতক আতিকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জানতে পারেন, দেড়মাস আগে শিশু সন্তান সাইমাকে হত্যার পর লুঙ্গিতে পেঁচিয়ে বাড়ির পিছনে পশ্চিমদিকে গাছের বাগানে গোবরের স্তুপের পাশে ৩/৪ফিট গর্ত করে পুতে রাখে। ঘাতক আতিকুল ইসলামের স্বীকারোক্তি নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পরে ঘাতকের তথ্যমতে বর্ণিত স্থান থেকে শিশু সাইমার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে মর্গে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে উপজেলার বড় বদনাপাড়ায় এক নারী মরিচ উঠাতে ক্ষেতে গিয়ে মস্তকবিহীন নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে খবর দেন। সিআইডি ক্রাইম সিন দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় ও ঠিকানা শনাক্ত করে। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে তার নাম দেলোয়ারা (৩১) বলে জানা সম্ভব হয়। তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের দিলালপুর গ্রামের রেজাউল করিমের স্ত্রী। নীলফামারীর জলঢাকার পশ্চিম গোরমুক্তা গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে তিনি। পুলিশ মস্তকহীন লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এতে জড়িত থাকার সন্দেহে বড় বদনাপাড়া গ্রামের মুনছুর আলী মন্ডলের ছেলে আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেন।
শনিবার চতরা ইউনিয়নের করতোয়া নদীর তীরে পাকার মাথা টোংরারদহ এলাকা থেকে মাথাটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের এসআই অনন্ত কুমার বর্মণ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশের একটি দল বস্তা ও ব্যাগে ভর্তি ছবি, সিমকার্ড, কাগজে লিখিত কয়েকটি মোবাইল ফোন নম্বর পেলে নারীর পরিচয় জানতে পারে। এক পর্যায়ে আতিকুলের গতিবিধিতে নজর রাখে তারা। শনিবার সকালে বোরকা পরে পালিয়ে যাওয়ার পথে কাবিলপুর ইউপির ঘনশ্যামপুর থেকে তাকে আটক করা হয়।
আতিকুলের স্বীকারোক্তিতে কাটা মাথা, শিশুর লাশের সন্ধান মিললে উদ্ধারে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। দু’টি হত্যাকান্ডের রহস্য এবং ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে তদন্ত চলছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকতার্ ওসি এমএ ফারুক। এদিকে স্বজনরা দেলোয়ারার লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানালে শনিবার রাতে পুলিশের উদ্যোগে রংপুর সদরের মুন্সিপাড়া সরকারি কবরস্থানে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়।
tawhidit.top/