সঞ্জিব দাস,গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।
পটুয়াখালীর গলাচিপায় ধান মাড়াইয়ের মেশিন মালিকদের সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার কারণে কৃষকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন কৃষকরা। এই সিন্ডিকেটের কারণে প্রায়ই সংঘর্ষ ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের কৃষক আলম প্যাদা (৫৫) অন্য এলাকা থেকে ধান মাড়াই মেশিন ভাড়া করে আনায় মারধরের শিকার হন। হামলায় মাড়াই মেশিনের মালিক মো.জলিল ফকিরও (৩৫) আহত হন। গুরুতর অবস্থায় তাদের গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,কৃষক আলম প্যাদার গোলাভরা প্রায় ১০০ আটা ধান বৃষ্টির কারণে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়। তিনি এলাকার মাড়াই মেশিন মালিকদের একজন দেলোয়ারের কাছে ধান মাড়াই করে দিতে বলেন। কিন্তু দেলোয়ার মেশিন নষ্টের কথা বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। বাধ্য হয়ে আলম পাশের এলাকা থেকে মেশিন ভাড়া করেন এবং রোববার রাতে ধান মাড়াই শুরু করেন।
এতে স্থানীয় মেশিন মালিক দেলোয়ার (৩৫), জাহাঙ্গীর (৩৫), আলমগীর (৩০), রাজ্জাক (৪০), রিপন (৩০) এবং আলতু খাঁ (৫৫) ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে আলম প্যাদার ওপর হামলা চালান। এসময় মাড়াই মেশিনের মালিক জলিল, কৃষক আলমের ছেলে ও মেয়ে মারধরের শিকার হন। মাড়াই মেশিন ভাংচুর চালানো হয়।
আলম প্যাদার মেয়ে নুপুর বলেন, “ধান নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচাতে পাশের এলাকা থেকে মেশিন আনতে হয়েছিল। এ কারণে বাবাকে মারধর করা হবে, তা ভাবতেও পারিনি। সিন্ডিকেটের কারণে কৃষকরা জিম্মি হয়ে পড়ছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
অভিযুক্তের মধ্যে একজন রিপন হাওলাদার বলেন, “স্থানীয় মেশিন ব্যবহার না করে অন্য এলাকার মেশিন আনায় কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়েছে। তবে আমরা মীমাংসার চেষ্টা করছি।”
স্থানীয় কৃষকরা এ ধরনের সিন্ডিকেটের হাত থেকে মুক্তি পেতে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা দাবি করেন, এই ঘটনা যেন আর কখনও পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সিন্ডিকেটের শৃঙ্খল ভেঙে কৃষকদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।
কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আরজু আক্তার জানিয়েছেন, ধান মাড়াইয়ের ক্ষেত্রে এক এলাকার মাড়াই মেশিন অন্য এলাকায় যেতে পারবে না—এমন কোনো নিয়ম নেই।
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশাদুর রহমান বলেন,”লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
tawhidit.top/