• মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:২৯ অপরাহ্ন

ভোলায় বেড়েছে গরু চোরের উৎপাত, মাংস নিয়ে সহযোগী গরু চোর আটক

নিউজ রুম / ৮০
সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৪

 

ভোলা প্রতিনিধি।।

ভোলা ফের বেড়েছে গরু চোরের উৎপাত মাংস পরিবহন কালে আটক সহযোগী চোর। ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের গোয়াল থেকে রাতের আধারে গরু চুরি যেন থামছেই না। কয়েকদিন পরপরই সংঘবদ্ধ চোরের দল হানা দেয় নিরীহ কৃষকের উপর।

উত্তর ভোলার সাধারণ মানুষ রাতের পর রাত পাহারা দিয়েও স্বস্তি মিলছে না চোরের হাত থেকে । তাদের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে এলাকার মানুষ। প্রতিরাতেই কোনো না কোনো এলাকায় হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরের দল। গভীর রাতে গোয়াল ঘর থেকে গরু চুরি করে বিরাণ ভূমি ও নির্জন চরে নিয়ে জবাই করে মাং কসাইখানায় বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।

গরু জবাই করে নম্বরবিহীন ইজিবাইক ও সিএনজিতে নিয়ে যায় চোরেরা। গতবছর খানেক আগে উপজেলার ২নং পূর্ব ইলিশার ঘরপোড়া নামক স্থানে বাড়ির ঘরের ফ্লরের সন্ধান পায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটন। ঐ ঘটনায় বেশকটি গরু উদ্ধার করে প্রকৃত মালিক কে গরু গুলো বুঝিয়ে দেন উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় চেয়ারম্যান। তার পরে কিছুদিন গরু চুরি বন্ধ থাকলেএ আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে চোরে দলটি।

আর এসব চুরির ঘটনায় খুব কম সংখ্যক মামলা রেকর্ডভুক্ত হওযার প্রেক্ষিতে ধরা ছোয়ার বাহিরে থেকে যায় চোরেরা। ভোলা সদরের ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গরু চুরির ঘটনায় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ চুরি যাওয়া কোন গরু উদ্ধার বা কোন চোর আটক বা সনাক্ত করতে পারেন নাই। গত বছর চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটনের সহায়তায় কিচু চোরকে আটক করার পরে মামলা হলেও কদিনে পরেই জমিনে মুক্ত হয়ে আবারো বেপরোয়া হচ্ছে এই সঙ্গব্ধ চোরেরা।

তবে চোরেদের জবাই করা গরুর মাংস কসাইখানা পৌছাতে দৃষ্টি এড়াতে অভিনব কৌশল ব্যাবহার করেন তারা। তারা প্রতিবন্ধী ইউসুফের ইজিবাইক ব্যাবহার করেই মাংস পৌছে দেন দোকানে দোকানে।

গতকাল ১০ নভেম্বর রবিবার উপজেলার ২ নং পুর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের গরীব কৃষক সিরাজ মিয়ার বসত ঘরের দরজাগুলো বাহির থেকে বেঁধে দিয়ে গভির রাতে গোয়াল ঘর থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ১ টি গরু শিকলের তালা ভেঙ্গে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চোরের দল।

এ ঘটনায় সিরাজ মিয়া রাতেই তার আত্মীয় স্বজনদের সাথে নিয়ে খুঁজাখুঁজি করার এক পর্যায়ে বাড়ির অদুরে পিরের দোকান নামক স্থানে পৌঁছাতে একটি ইজিবাইক দেখতে পায়। ইজিবাইকটি থামালে ইজিবাইকের মধ্যে গরুর পা,চামড়া,ও ভুঁড়ি দেখে সনাক্ত করেন এগুলো তাদের গরু জবাই করে অবশিষ্টাংশ পাচার করা হচ্ছে। এসময় তারা ইজিবাইকটি চালক সহ আটক করে ফেলেন। আটক ইজিবাইকের মধ্যে মাংস মাপার একটি ডিজিটাল মিটারও পাওয়া যায় ।

এদিকে আটক ইউসুফের মুঠোফোন জাচাই করে দেখা যায় রাত ১১ টার পর থেকে সে একজন সাবেক জনপ্রতিনিধির সাথে প্রায় ৫৬ বার কল আদান প্রদান করে কথা বলেছেন। ঐ ফোন নম্বরটি ট্রু কলারে মাসুদ ভাই বিকাশ নামে নির্দিষ্ট করেন।

অপর একটি ফোন নম্বরের সাথে ইউসুফ রাত ১১টায় দুই মিনিট কথা বলেন। দুই মিনিট কথা বলা নম্বরটি ইউসুফের একই এলাকার আলাউদ্দিন ভুলাই নামে নিবন্ধিত। তবে জানাগেছে ইউসুফ ঐ রাতে আলাউদ্দিনকে কল করে তার ডিজিটাল মিটারটি হাওলাত চাইলে তিনি তা দিতে রাজি হয় নাই। তবে ঐ রাতের কোন এক সময় তার ডিজিটাল মিটারটি ও দুইটি ক্যারেট চুরি হয়।

অটো চালক আটক ইউসুফ জানান আমি রাতে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ফেরার পথে চোরা মিরাজ আমার গাড়িতে এসব ভুড়ি,পা,চামড়া, ক্যারেট ও ডিজিটাল মিটার তুলে দিয়ে বলেন ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে একজন লোক এগুলো নিয়ে যাবে তোকে ১০০ টাকা ভাড়া দিবে। এসময় পিরের দোকান মসজিদের সামনে তারা আমাকে আটকে ফেলে। পরে আমি সাবেক মেম্বার ইকবাল হোসেন হাওলাদার কে শেষ বারের মত কল দেই।তবে রাতে ইকবাল হোসেন হাওলাদারের সাথে অসংখ্য বার কথা বলার বিষয়টি স্বিকার করেন ইউসুফ। ইউসুফ আরো বলেন কল করার পরে ইকবাল হোসেন হাওলাদার ও সিরাজ ফরাজি এসে গরু চুরির ক্ষতিপূরণ হিসেবে আমাকে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা পরিশোধ করার আদেশ দিয়ে চলে যায়।

গরু চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করে ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাসনাইন আহমেদ বলেন খবর শুনে আলামত জব্দসহ ইউসুফ কে আটক করা হয়েছে । মূলত ইউসুফ চোরের সহযোগী সে প্রতিবন্ধী টাইপের লোক তার মাধ্যমে চোরাই মালামাল পরিবহন করে সংঘবদ্ধ চোরের দল। পুলিশ তার দেয়া তথ্য মতে চোরদের সনাক্ত করতে চেষ্টা করছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। থানা পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বধ্যপরিকর


এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ
tawhidit.top/