মোঃ কামাল হোসেন বাবুল,গাজীপুর সংবাদদাতা।।
প্রতাপপুর উচ্চ বিদ্যালয়টি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলাধীন প্রহলাদপুর ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামে অবস্থিত। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অতি প্রাচীন (কয়েক প্রজন্মের কেউ গাছটি রোপন করতে দেখনি) একটি দেবদারু গাছ ছিল যা বিদ্যালয় তথা এলাকার ঐহিত্য হিসাবে পরিচিত। গাছটি ছায়া দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠের কার্যক্রম পরিচালনা এবং বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বর্ধক হিসাবে কাজ করতো। এমনকি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা গাছের নীচে বসে অবসর সময় কাটাতো। কিন্তু গত ২৫/১০/২০২৪ খ্রিস্টাব্দে সু-পরিকল্পিত ভাবে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে (জেলা প্রশাসক/ ইউএনও ও বন বিভাগের) এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ১ লক্ষ টাকা মূল্যের গাছটি কর্তন করে বিক্রি করে দেয়।
গাছটি কাটতে তারা এক অভিনব পদ্ধতি অবলম্বনকরে যা দেখে এলাকার সাধারণ লোকজন হতবাগ হয়ে যায়। প্রথমে তার এলাকার কিশোর গ্যাং যার অন্যতম সদস্য হচ্ছে প্রতাপপুর গ্রামের মোফাজ্জলের ছেলে মোঃ কাইয়ুম হোসেন আলী হোসেনের ছেলে কাউছার হোসেন, মুশিউর মোল্লার ছেলে আনাছ,আমির হোসেনের ছেলে তাজুল ইসলাম এর ছেলে কচি, সেকান্দরের ছেলে শওকত, রাখালিয়া গ্রামের মমিন এর ছেলে মিনহাজসহ ৫০ জনের মত লোক দিয়ে সরকারি ছুটির দিন বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ বড় করার নাম করে বিদ্যালয়ের ফুলবাগানের কিছু গাছ এবং বিদ্যালয়ের ওয়াশ বøকের একাংশ ভেঙ্গে ফেলে এবং ফুটবল খেলার গোলকিপার বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের খুবই নিকটে জোরপূর্বক স্থাপন করে। এতে দেবদারু গাছটি মাঠের ভিতরে চলে আসে। এই বিষয়ে এলাকায় কৌহলের সৃষ্টি হলে তারা নিজেরাই মিটিং করে শিক্ষকদের চাকুরী হতে বাধ্যতামূলক অব্যাহদি দিয়ে দেওয়ার কথা বলে শিক্ষকদের চাপ প্রয়োগ করে । বিদ্যালয় গাছ কাটার জন্য রেজুলেশন করিয়ে নেয় এবং এলাকা হতে ভয়ভিতি দেখিয়ে দেবদারু গাছ কাটার পক্ষে কিছু স্বাক্ষর সংগ্রহ করে।
বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান কে কয়েক বছর পূর্বে মেরে ফেলার জন্য কিশোর গ্যাংরা রাতে হামলা করে । তখন বিষয়টি সারাদেশে চানচল্যের সৃষ্টি করে এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রায় ছয় মাসের চিকিৎসায় সুস্থ্য হয়ে কাজে যোগদান করেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: হাবিবুর রহমান। যার ফলে বর্তমানে এই প্রভাবশালীদের দাপটের সমনে এলাকার কেউ কথা বলতে চাচ্চে না।
গত ২৭/১০/২০২৪ তারিখ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসলেও প্রভবশীরা তাকে ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রভাবশালীদের মধ্যে অন্যতম গ্রামের মোঃ মমিন মোল্লা (বর্তমান কদমা গ্রাম নিবাসী), বিনপি নেতা মৃত মোসলে উদ্দিন মাস্টারের ছেলে জিয়াউর রহমান , মৃত কদ্দুচ মোল্লার ছেলে নাজিম উদ্দিন মোল্লা , হালিম মোল্লা, মৃত আবু সাহিদ মোল্লার ছেলে জালাল মোল্লা।
বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক, সাবেক ছাত্র এবং এলাকার সচেতন মহলে আলোচিত হলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেনা। বর্তমানে কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং দাতের আশ্রয়কৃত বিপথগামী কিশোর গ্যাং এর অত্যাচারে গ্রামের নিরিহ সাধারণ মানুষ অসহায় এবং নিরুপায় হয়ে শুধু তাকিয়ে আয়ে এই বিষয়ের একটি সুষ্টু বিচারের।
এ ব্যপারে গাজীপুর সদর ইউএনও এর সাথে যোগযোগ করলে তিনি বলেন- আমি এ বিষয়ে অবগত আছি। আমি প্রধান শিক্ষককে বলেছি এ ব্যপারে একটি প্রতিবেদন তৈরী করে আমার নিকট জমা দিতে। পরে আমি এর আইগত ব্যবস্থা নিবো। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গণমাধ্যমকে বলেন-আমি নিরুপায় কিছু বলতে পারি না। কিছু বললেই আমার উপর হামলা চলে। এর আগেও আমাকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পিতভাবে আমার মাথায় কুপ দিয়ে মাথার খুলি ফেলে দেয়। পরে আমি ৭ লক্ষ দিয়ে চিকিস্যা করে আল্লাহ্ রহমতে কোন রকম বেচে আছি। তবে আমি শুনেছি এলাকার লোকজন সরকারি ছুটির দিন শতবর্ষী গাছটি কেটে বিক্রি করে দেয়। এ ব্যপারে এলাকার কিছু গর্ণমান্য ব্যক্তি গাছ কাটার সময় আমাকে ফোন করে। আমি এসে দেখি প্রায় কয়েকশত ছেলে মিলে গাছটি কেটে ফেলেছে। আমি নিরুপায় হয়ে এ বিষয়টি ইউএনও স্যারকে অবহিত করেছি। স্যার আমাকে আইনের আশ্রয় নেওয়া এবং এর একটি প্রতিবেদন তৈরী করে জমা দেওয়ার জন্য বলেছেন। এ ব্যপারে এলাকার এড. মো: নাজিম উদ্দিনের সাথে কয়েকবার যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের কথা বলতে পারবো না বলে জানান।
tawhidit.top/